July 31, 2025, 4:15 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা ধানের রেকর্ড উৎপাদন, আমদানিও প্রচুর তবু চালের দাম বেড়েছে ১১%-১৬% যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির চাপ, এডিবি পূর্বাভাসে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমার শঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ/বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিয়ে নতুন রিপোর্ট প্রকাশ রাজবাড়ীতে পদ্মায় ভাঙন/নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি

প্রচুর অভিযোগ ইবি’র ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজের বিরুদ্ধে, তদন্তে কমিটি

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন, ইবি/
আওয়ামী লীগ আমলে বিতর্কিত নিয়োগে শিক্ষক হওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগ আমলে এনে হাফিজের শাস্তি দাবী করছে। শাস্তির দাবিতে ঐ ্িবভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ক্যম্পাসে মিছিলসহ সড়ক অবরোধ পর্যন্ত করেছে। অবশেষে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশ^বিদ্যালয় কতৃপক্ষ একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ে ঐ সময়ের বহু বিতর্কের হোতা উপাচার্য রাশিদ আসকারীর আমলে যে কয়টি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় তার সবগুলোই ছিল বিতর্কিত ও প্রবর সন্দেহজনক। ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ছিল তার অন্যতম। ঐ বিভাগে নিয়োগ পাওয়া চারজন প্রভাষকই ছিল নানাভাবে বিতর্কিত। কারো বিরুদ্ধে চরম অযোগ্যতা, কারো বিরুদ্ধে চরিত্রহীনতার অভিযোগ উঠে আসে। এসব সত্বেও শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় বলে ক্যম্পাসের একাধিক সূত্র দাবি করেছে।
গত সোমবার, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী হেনস্তা, আপত্তিকর মন্তব্য, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ ২৭ দফা অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা উপাচার্যের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করে।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আনীত অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লখযোগ্য হলো- শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, কথার অবাধ্য হলে ইন্টারনাল মার্কস কম দেওয়া, মেয়েদেরকে শ্রেণিকক্ষে সবার সামনে জামা কাপড় নিয়ে কথা বলা, নর্তকী, পতিতা, বাজারের মেয়ে, বলে গালিগালাজ, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ক্লাসে কিংবা সবার সামনে হেনস্থা, শিক্ষার্থীদের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারার ও ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা, ব্যক্তিগত রুমে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা, ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য রেজাল্ট খারাপ করে দেওয়া, অন্যান্য শিক্ষকদের নাম নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে অপমান, অপদস্থ এবং চাপ দেওয়া।
এর বাইরেও বিশ^বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলা হলে শিক্ষক হাফিজের বিরুদ্ধে অন্য অনেক অভিযোগ উঠে আসে।
নাম প্রকাশ না করে একজন সিনিয়ির শিক্ষক বলেন, ছেলেটি (ঐ শিক্ষক) বয়সে অনেক ছোট হলেও সিনিয়রদের শিক্ষকদের সাথে ম্যানার রক্ষা করে কথা বলে না। যে কাউকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, সিনিয়র শিক্ষকদের জ্ঞান-গরিমা নিয়ে হরহামেশা কটুক্তি, ভিন্নমতের শিক্ষকদের নিয়ে কুরূচিপূর্ণ কথাবার্তা বলতে শুনেছি।
বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, কোন কাজে প্রশাসন ভবনে এলে শিক্ষক হাফিজ সিনিয়র কর্মকর্তাদের ’এ্যাই যে শুনেন’ ‘কি যেন নাম আপনার’ এই জাতিয় অসৌজন্যমূলক কতৃত্বপূর্ণ আচরণ করে থাকে। কর্মচারীদের তো মানুষ বলেই মনে করে না। অথচ, ঐ শিক্ষকের থেকে অনেকবেশী উচ্চ শিক্ষিত, বিদেশী পিএইচডিধারী কর্মকর্তা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনে রয়েছেন বরে জানান ঐ কর্মকর্তা।
আলচ্য ঘটনার পর এই প্রতিবেদক ঐ বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেন। একজন শিক্ষার্থীও পাওয়া যায়নি যে তার নিজ বিভাগের শিক্ষকের পক্ষে একটি কথা বলবে।
জানা গেছে, বর্তমান উপাচার্যের পূববর্তী উপাচার্য প্রফেসর আবদুস সালামের সাথেও শিক্ষক হাফিজ খারাপ আচরণ করেছিল। জানা গেছে, বিশ^বিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলাভবনে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ অবিস্থত। ঐ সময়ে ভবনের নতুন নির্মিত চতুর্থ তলায় রুম বরাদ্দের আগেই শিক্ষক হাফিজ তার নিজ অনুসারী কতিপয় শিক্ষার্থী নিয়ে ঐ নির্মিত ভবনের বিভিন্ন রুমে তালা মেরে দখল কায়েক করে। শুধু তাই নয়, তার অনুসারী শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঐ সময় উপাচার্য াফিস ঘেরাও করে করে। বিষয়টি সরেজমিনে ঐ সময়ের উপাচার্য ও কোষাধক্ষ্য দেখতে গেলে এবং ঐ শিক্ষককে তালা দেয়া রুমগুলো খুলতে বললে সে উপাচার্যের সাথে চরম খারাপ করে এবং চাবি নিয়ে সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এই ঘটনায়, প্রশাসন ঐ শিক্ষককে উপাচার্য অফিসে তলব করলে সে পূনরায় ঐ শিক্ষার্থীদের নিয়েই উপাচার্য অফিসে এসে ঘেরাও করিয়ে নিজে উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করে। এসময় উপাচার্যের সাথে তীব্র বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হলে সিনিয়র শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে সে থেমে যায়। ঐ সময় উপাচার্য শিক্ষক হাফিজকে ‘মানসিকভাবে বিকৃত’ বলে অভিহিত করেন।
ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটিতে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরীফকে আহ্বায়ক ও সহকারী প্রক্টর ড. খাইরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ ও আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ারুল ওহাব। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে সংঘটিত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগের যথাযথ তদন্ত ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র উপদেষ্টা সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভার সুপারিশের আলোকে উপাচার্য এই কমিটি গঠন করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ওই শিক্ষকের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরিফ বলেন, সঠিকভাবে তদন্ত করেই প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net